কোন কৌশলে মুক্তি পাবে বাংলাদেশি নাবিকেরা?


১৮ই মার্চ, ২০২৪।

সোমালিয়ান জলদস্যুররা আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের অপহরণের শিকার বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। খবর পৌঁছানোর পরে গোটা বাংলাদেশর চোখ এখন সোমালিয়া উপকূলে। 

  • কি ঘটছে সেখানে? 
  • কিভাবে উদ্ধার পাবে নাবিকরা?
  • কত মুক্তিপোন চাইবে?
  • এখনো কেন যোগাযোগ করছে না?

হাজারো প্রশ্ন সবার মনে। বাংলাদেশিদের সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ার নজির এর আগেও আছে। আর সেই সূত্র ধরেই কিছুটা মিলিয়ে নেওয়া যায়। কি ঘটতে যাচ্ছে জাহাজ আর তেইশ নাবিকের ভাগ্যে। এর আগে একই কোম্পানির জাহানমণি জাহাজ অপহরণ করেছিল সোমালিয়ান জলদস্যুরা। ২০১০ সালে ১১ই নভেম্বর এমভি জাহানমণি ৪৩১৫০ টন নিকেল আকোরিক নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে যাত্রা শুরু করে। সিঙ্গাপুর হয়ে গ্রিসে যাওয়ার পথে ৫ই ডিসেম্বর জাহাজটি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। প্রথম সাতদিন জাহাজটির কারো সাথে কোন যোগাযোগ করা যায়নি। সাতদিন পর জলদস্যুরা তাদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি নাবিকদের ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে মুক্তিপোণ দাবি করে। একজন জলদস্যু নাবিকদের জানান তারা নয় মিলিয়ন ডলার মুক্তিপোন চায়। এই ব্যাপারে জলদস্যুদের পক্ষ থেকে জাহাজ মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা হয়। এদিকে জাহাজের পরিস্থিতি হয়ে উঠে ভয়াবহ। কারণ জাহাজে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়েছিল। এভাবেই কাটে আরও বেশকিছু দিন। অবশেষে ২০১১ সালে ২২শে ফেব্রুয়ারি সোমালিয়ান জলদস্যুদের সাথে দর কশাকশি চূড়ান্ত হয়। দস্যু প্রতি নিধীদের সাথে চুক্তি লেখাপড়া হয় ২৮শে ফেব্রুয়ারি। তারপর সোমালিয়ান জলদস্যুরা এমভি জাহানমণিকে ওমানের সালালা বন্দর পর্যন্ত যাওয়ার মতো জ্বালানি তেল এবং নাবিকদের খাওয়াদাওয়া ও কিছু ঔষধ পত্র দেয়। ১২ই মার্চ একটি ছোট বিমান সমোলিয়ার উপকূলের উদ্দেশ্যে উড়ে যায়। 


সেখানে সোমালিয়ান জলদস্যুদের বহনকারী একটি স্পিডবোটে বিশেষ কৌশলে দুটি ওয়াটারপ্রুফ সুটকেস ছুড়ে দেওয়া হয়। যে সুটকেসে ছিল মুক্তিপোণ ১০০ ডলারের নোটের বান্ডিলে পূর্ণ। পণ পেয়ে জলদস্যুরা আনন্দে চিৎকার দিয়ে উঠেছিল বলে জানান জাহাজটির ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফরিদ। ২৮ কোটি টাকা পেয়ে উল্লাস করবারি কথা। নাটকীয়তার ১০০ দিনের মাথায় ২০১১সালের ১৪ই মার্চ সকালে নাবিক এবং জাহাজটি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হয়। জাহানমণি উদ্ধার প্রক্রিয়ার সাথে যুক্তরা বলছেন জলদস্যুদের চাওয়া পাওয়া জানতে এক সপ্তাহ সময় লাগে। এখন প্রশ্ন হলো তারা কিভাবে এই মুক্তি পোনের টাকা নির্ধারণ করে? মূলত তাদের মুক্তি পোণের পরিমাণ কোম্পানির উপর নির্ধারণ করে। কোম্পানি যত ছোট হবে মুক্তি পোনের পরীমাণ তত কম হবে। আর কোম্পানি যত বড় মুক্তি পোনের পরীমাণ তত বেশি হবে। ১৪ বছর আগে এমভি জাহানমণি আটক করে দস্যুরা ১০০ কোটি টাকা দাবি করে। সেটা পরে দর কশাকশির পর ২৮ কোটি টাকায় নামে। জাহানমণি উদ্ধার কারিরা জানান তাদের মুক্তিপোণ পরিশোধ করলে তারা জাহাজে থাকা নাবিকদের কোন ক্ষতি করে না।